স্বৈরাচার পতনের পর নাগরিকদের করণীয়

স্বৈরাচার পতনের পর নাগরিকদের করণীয়

একজন স্বৈরাচারের পতন একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যতের আশা নিয়ে আসে। তবে, এই মুক্তির মুহূর্তটি দ্রুত বিশৃঙ্খলায় পরিণত হতে পারে যদি নাগরিকরা দায়িত্বশীলভাবে কাজ না করে। আইন ও শৃঙ্খলার অনুপস্থিতিতে, বেআইনি কার্যকলাপ সমাজের স্থিতিশীলতা এবং নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে। নাগরিকদের জন্য এই সম্ভাব্য বিপদগুলি বোঝা এবং শান্তিপূর্ণভাবে উত্তরণের পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। স্বৈরাচারের পতনের পর কী করা উচিৎ এবং কী করা উচিৎ নয় তা আমরা একটু জেনে নেই:

বেআইনি কার্যকলাপের সম্ভাবনা সমূহ:

১। লুটপাট এবং ভাঙচুর: সরকারের অনুপস্থিতিতে, কিছু ব্যক্তি পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে লুটপাট ও ভাঙচুর করতে পারে। এটি অর্থনৈতিক এবং অবকাঠামোগত ক্ষতি করতে পারে, যা পুরো জাতির জন্য ক্ষতিকর।

২। হিংসা এবং প্রতিশোধ: আইনের অনুপস্থিতিতে, মানুষ প্রতিশোধপরায়ণ হতে পারে, যা বেআইনি হত্যাকাণ্ড, হামলা এবং অন্যান্য হিংস্রতার কারণ হতে পারে। এটি আইনের শাসনকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।

৩। সন্ত্রাসী সংগঠনের উত্থান: সরকারের শূন্যতায়, বিভিন্ন গোষ্ঠী তাদের স্বার্থ রক্ষা বা নিয়ন্ত্রণ দখল করতে সন্ত্রাসী সংগঠন গঠন করতে পারে। এরা সশস্ত্র সংঘাতে লিপ্ত হতে পারে, যা দেশকে আরও অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে যা কিনা শান্তিপূর্ণ শাসন প্রতিষ্ঠা করাকে কঠিন করে তুলতে পারে।

৪। মানবাধিকার লঙ্ঘন: সংখ্যালঘু, রাজনৈতিক ভিন্নমতাবলম্বী এবং নারীগণ নির্যাতনের লক্ষ্য হতে পারে। নজরদারি এবং জবাবদিহিতার অভাবে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন ঘটতে পারে।

নাগরিকদের অবিলম্বে যে সকল পদক্ষেপ নেওয়া উচিৎ:

১। অস্থায়ী সরকার কে সমর্থন করুন: শৃঙ্খলা পুনঃস্থাপন এবং স্থিতিশীলতা প্রদানের জন্য অস্থায়ী সরকার বা কর্তৃপক্ষকে সাহায্য করুন।

২। শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখুন: হিংস্র কার্যকলাপে অংশগ্রহণ বা উস্কানি দেওয়া থেকে বিরত থাকুন। ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষা দিতে এবং শৃঙ্খলা বজায় রাখতে যে সকল বাহিনী নিয়োজিত রয়েছে তাদের পক্ষে থাকুন।

৩। রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো রক্ষা করুন: সম্মিলিত ভাবে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো সমূহ রক্ষা করুন।

৪। সংলাপ ও সহমর্মীতা প্রচার করুন: বিভিন্ন সম্প্রদায় ও গোষ্ঠীগুলির সাথে সংলাপে অংশ নিন এবং সহমর্মীতা প্রচার করুন যাতে উত্তেজনা কমানো যায় এবং প্রতিশোধমূলক হিংসা প্রতিরোধ করা যায়। অতীতের নিপীড়নের সমাধানের জন্য এবং ন্যায়বিচারের অনুভূতি তৈরি করতে সত্য এবং সহমর্মীতামূলক উদ্যোগকে সমর্থন করুন।

নাগরিকদের যেসব কাজ এড়িয়ে চলা উচিৎ:

১। বেআইনি কার্যকলাপে অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকুন: লুটপাট, ভাঙচুর বা যে কোনও ধরনের হিংসায় অংশগ্রহণ করবেন না। এই ধরনের কার্যকলাপ শুধুমাত্র বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে এবং শৃঙ্খলা পুনঃস্থাপনের প্রচেষ্টাকে ক্ষুণ্ন করে।

২। প্রতিশোধ গ্রহণ করবেন না: শত্রু বা সহযোগীদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়া থেকে বিরত থাকুন। প্রতিশোধ হিংসার চক্রকে অব্যাহত রাখে এবং জাতি গঠন আরও কঠিন করে তোলে।

৩। বহিষ্কারমূলক অভ্যাস এড়িয়ে চলুন: যে কোনও নতুন সরকার, কর্তৃপক্ষ বা গোষ্ঠীর উদ্যোগকে অন্তর্ভুক্তিমূলক করুন। উল্লেখযোগ্য গোষ্ঠীগুলিকে বাদ দেওয়া আরও সংঘাত সৃষ্টি করতে পারে এবং স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টাকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।

৪। অপপ্রচার এড়িয়ে চলুন: স্বচ্ছ এবং দায়িত্বশীলভাবে কথা বলুন। গুজব বা অপপ্রচার ছড়ানো থেকে বিরত থাকুন, যা ভয় এবং অস্থিরতা বাড়াতে পারে।

৫। দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার এড়িয়ে চলুন: সততার সাথে কাজ করুন এবং জবাবদিহি করুন। দুর্নীতি এবং ক্ষমতার অপব্যবহার জনসাধারণের আস্থা ক্ষুন্ন করতে পারে এবং নতুন করে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে।

আমাদের উচিৎ এমন একটি সমাজের জন্য একটি ভিত্তি প্রতিষ্ঠা করা যা আইনের শাসনকে সম্মান করে, মানবাধিকারের সুরক্ষা দেয় এবং স্থায়ী শান্তি এবং সমৃদ্ধি প্রচার করে। একসাথে, আমরা সকলের জন্য একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে চাই।

Redefining Youth: The Complexities of Categorizing ‘Children’ and ‘Adolescents’

Redefining Youth: The Complexities of Categorizing ‘Children’ and ‘Adolescents’

Image by <a href="https://pixabay.com/users/geralt-9301/?utm_source=link-attribution&utm_medium=referral&utm_campaign=image&utm_content=6706856">Gerd Altmann</a> from <a href="https://pixabay.com//?utm_source=link-attribution&utm_medium=referral&utm_campaign=image&utm_content=6706856">Pixabay</a>

The Minister of Home Affairs, in one of his latest press briefings, differentiated between the terms “children” and “adolescents.”

As a teacher of children, adolescents and adults, it is my duty to clarify any confusion regarding this matter. But it was far more complex than I initially thought.

According to Cambridge dictionary, the definition of “Children” is “a boy or girl from the time of birth until he or she is an adult, or a son or daughter of any age”.

The Convention on the Rights of the Child (CRC) is the most universally accepted human rights instrument, ratified by every country in the world except two (and Bangladesh is not one of the exceptions). The Convention incorporates the full range of human rights—civil, political, economic, social, and cultural rights—of children into one single document. The Convention was adopted by the UN General Assembly on 20 November 1989 and entered into force in September 1990.

The Convention outlines in 41 articles the human rights to be respected and protected for every child under the age of eighteen years.

Article 1 of this document clearly states the definition of child as “every human being below the age of eighteen years, unless the national law considers majority attained at an earlier age”.

Now, let’s take a look at what Bangladeshi law considers a “child.” The Children Act 2013 clearly defines it in Section 4, “Notwithstanding anything contained in any other law for for the time being in force, all persons up to the age of 18 (eighteen) years shall be regarded as children for the purposes of this Act”.

Finally, according to Banglapedia, “Children in Bangladesh are grouped in three categories: shishu – anybody under 5 years of age, balak or balika – a child of 6 to 10 years and kishor or kishori – a child of age between 11 and 14”.

Now, the question arises: where do individuals aged between 15-17 fall? They are called “adolescents.” According to The Tea Plantation Labour Ordinance of 1962, it means a person who has completed 15 but not 17 years. According to The Factories Act of 1965, it means a person who has completed 16 years but is below the age of 18 years.

Naturally, the question arises whether these adolescents are considered “children.” Let’s look at the Bangladesh National Adolescent Strategy document (finally published on 15 December 2020). It defines “adolescence” as “a period of human growth and development that occurs after childhood and before adulhood and includes those persons between 10 and 19 years of age.

Let’s come full circle now: how does the Cambridge Dictionary define adolescence? “A young person who is developing into an adult”—meaning not an adult yet. But the Bangladeshi perspective is not to consider them as children. In a Prothom Alo report published on 5 July 2023, titled “Children Act: Lowering age below 18 years to define a child goes against international law,” Naznin Akhter asked the Liberation War Affairs Minister AKM Mozammel Haque what the new age limit for children would be. He said that it should not be more than 14 years and that teens aged between 14-18 should be considered adolescents and thus should be subject to punishment.

This is so problematic…

If we deny these adolescents the rights and protections afforded to children, do we not also deny them the guidance and support they need to navigate this critical stage of their lives? Adolescence is a time of profound transformation, a bridge between the innocence of childhood and the responsibilities of adulthood. By categorizing them as neither children nor fully adults, we risk losing the essence of their unique developmental needs.

Shouldn’t our laws and policies reflect the complexities of their experiences rather than forcing them into rigid categories? For argument’s sake, if they are old enough to be held accountable as adults, should they not also be granted the full spectrum of rights that come with adulthood, including the right to vote, to have their voices heard in shaping the society they are inheriting?

These young individuals are not just the future of our nation; they are the present, actively participating in the discourse, innovation, and progress of our society. To marginalize them based on an arbitrary age distinction is to overlook their potential and contributions. While we have been preoccupied with definitions and categories, Gen Z has been busy redefining this nation and what it stands for. They are not merely talkers like us; they believe in action. Perhaps that is how things should be done.

Red Is the New Black

Red Is the New Black

Image by Dan Cross from Pixabay

Anondo debated whether he should go to work. The late July heat threatened to scorch the morning. An unknown fear had been gnawing at him for some time. He didn’t use social media, which kept him unaware of the turmoil around him. He had other worries—his father’s irresponsible gambling habit had forced him to abandon his studies and become the sole breadwinner of his household. He waited eight months for this single opening at the café and finally landed his dream job as a Café Assistant. It was much better than his previous position in the cleaning staff at the local hospital. If he worked diligently, he could soon become a Barista and earn more to support his mother and two young brothers. He prayed five times a day and remained apolitical. His dreams revolved around his family’s well-being.

“No, I gotta go to work! Shift starts at 2!”, he said to himself.

Anondo entered the café well ahead of his scheduled shift, but his supervisor’s sudden announcement of the café’s premature closure, startled him. The situation outside was worsening. Disappointed, Anondo went to the mosque for prayers with his colleagues. Afterwards, he sat with them for lunch. Chicken and fish were on the menu. He lost his appetite and couldn’t eat anything. Something was gnawing at him inside. He poured a glass of water from the dispenser, which reminded him of the new water purifier he had bought for his mother. It was quite expensive, at least for him with such a limited income while the inflation is skyrocketing each day. His mother had to scold him for “wasting money”, reassuring him that she was fine with boiling water on the stove. He smirked as he remembered his reply, “Ma, every time you drink water from here, you’ll remember me, whether I’m with you or not.” It was enough to silence her scolding.

“I should go home”, there was urgency in his voice. He realized he had spoken his thoughts out loud. “I don’t think you guys should go now. It might not be safe yet,” his Supervisor warned. “Nah, we are four people, we have uniforms and ID cards. Moreover, we will not be taking the main streets but the alleyways. I heard they are safe.”

It was a real challenge for them to navigate through the network of alleys—many of which had blocked exits by law enforcement members. He was so close to seeing his mother, “a few more kilometers…,” he heard his thoughts through the increasing volume of his heartbeat, which was gaining momentum by then.

“I don’t think you can go home; it’s going to get messy here. Cross the road, take shelter at my place until everything calms down,” a colleague advised, taking the initiative to cross the main street to reach his apartment on the other side. One by one, everyone followed him. Anondo followed, despite his mind’s eagerness to see his mother at home. Nothing else felt safer to him other than his mother’s lap. His thoughts were shattered by the deafening crack of a shotgun. Were there more shots after that? He could not tell. The echo of the shot continued through his involuntary scream, “O Ma go…”

A single shrapnel pierced right through the lower tip of  his breastbone, behind which he had kept the undying love for his mother. He saw red as the hemorrhage caused the blood to overflow through all his orifices, ornating the pitch-dark bitumen road just like flame trees do in June. Anondo could not realize as his body became lifeless in the moments that followed.

But I know…

Anondo did not return to his mother that day alive. He did not see his body piled up with other corpses on the hospital floor. He did not witness the doctors running from body to body, searching for signs of life, and making the harsh decisions of who to revive and who to let breathe their last. He did not see his friends and family unable to recognize him by his face but his blood-drenched uniform. He did not witness his family accepting donations from strangers to pay the freezing van driver to carry his body to his village for burial. He did not see the neighborhood vegetable seller’s dead body lying on the street, left for the dogs to feed on.

The tragedy is… we, had to see it all… and live with the fact that his life will remain unaccounted for in the death lists…

 

Disclaimer: This story is a work of fiction. Any resemblance to actual events, persons, or places is purely coincidental. If any part of this narrative appears to match real-life incidents, it is entirely a product of chance, and the reader is responsible for any perceived coincidences.

Freedom

Freedom

The loud man
is now silent.

But…

He whispers still,
in his mind.

And…
listens.
To the rhymes.

Waiting…

for freedom.

Guilt-Tripping With Fallacies

We have all done this at some point in our lives. Whether it’s with our parents, to get our favorite toys or with our friends to receive favors. We have made people feel guilty, to make them do something for us. It works most of the time. It’s not a great feeling though — when we are guilt-tripped. Guilt-tripping is one of the oldest tricks in the book of manipulation, and I’m noticing it around me a lot lately.

The intentions of guilt-tripping may vary, but the outcome is always the same — manipulation. We can say that the people who intentionally convince others that they’ve done something wrong and should feel ashamed of themselves/their actions have disordered characters. These people with disturbed characters are often successful in manipulating their victims.

You may ask, why are they so successful? Why are these victims so dumb to fall for those manipulative tactics? Well, are they really? Are the victims really dumb? The answer is “No!” In fact, the victims, who feel guilty or ashamed, are the people with a more developed conscience than the manipulators. This is exactly why the victims feel guilty in the first place. Unlike the manipulators, they are empathetic; they can feel.

What if we make these manipulators taste their own medicine? We may try, but that won’t have any effect on them. They will never fall for it because their consciences haven’t developed to the level, from where they can feel guilty or empathy. They may pretend to be affected, but deep down, they know they don’t care; just like the victims may pretend that they aren’t affected, but deep down, they are feeling guilty and ashamed. Therefore, it’s tricky to give a verdict about who’s a manipulator and who’s an empathetic person. One definite way of spotting this kind of manipulation is when you personally become a victim of such guilt-tripping.

After the George Floyd murder, the world has seen an anti-racist movement that was long overdue. People from different countries took the streets. Many netizens — activists or not — spoke up online, showing solidarity with the movement. This is the inculcation of what Martin Luther King Jr. wrote from the Birmingham jail.

“Injustice anywhere is a threat to justice everywhere. We are caught in an inescapable network of mutuality, tied in a single garment of destiny. Whatever affects one directly, affects all indirectly.”

Meanwhile, I couldn’t help but see a growing number of social media posts and even newspaper headlines saying that before we feel concerned about what is happening on the other side of the world, we should be doing something about the injustice happening in our own community first. Yeah. Proximity matters. This sounds valid. So, I shouldn’t be… Wait a minute! Why am I feeling guilty of not speaking against the injustice happening in my country and people? Why do I feel like I shouldn’t be concerned about black men dying in foreign soil when I won’t or can’t talk about the unjust treatment of people in my home country?

What an emotional distraction it is! This is the first logical fallacy I caught. This argument is an example of a “Red Herring Fallacy,” where the manipulator diverts the focus to something that seems to be relevant but is actually trying to confuse and distract the victim. The movement triggered by the murder of the Floyd is about racism against the black people in the U.S. hence, “Black Lives Matter (BLM).”

On the other hand, the injustice that happens in my country is a different case altogether. Unlike the African Americans, We weren’t brought to this land in chains and treated like animals for hundreds of years. It is not logical to compare the struggle of black people in America with our everyday struggles as the majority race of our country.

Now, if I take an active part in the BLM movement and choose not to engage with my country’s government, does it give anybody the right to slap a label of a hypocrite/traitor on me? Absolutely Not! But funny thing: It sounds like the only option!

I have seen posts that said something like this:

if you’re speaking out about Injustice happened with Floyd and not talking about the police brutality in Bangladesh, then you’re not an activist at all!

This kind of guilt-tripping is happening worldwide. Even some Bollywood stars are facing the same kind of faulty criticism from these groups of evangelical social media champions.

This brings me to the next fallacy I’ve identified. This time a classic “Black-or-White Fallacy!” Here the manipulators are limiting the options for the people who are speaking up about racism and putting them in an either-or position — either speak out about local issues or accept the label of “fake activist.”

Apart from being highly illogical, these arguments are surely affecting the ongoing social movements against racism. Think about the consequences these arguments are bringing with them. Whenever the manipulators are shaming the people who are currently talking about social issues of their own choice, the victims in most cases become silent because they are the people with a higher conscience. Their empathetic nature was the reason for them to speak out against that injustice in the first place.

Moreover, this kind of criticism will make them think twice in the future before they decide to speak up against another injustice, whether national or international.

The people of Bangladesh who are showing solidarity with the black Americans aren’t blind or deaf. They know very well what’s happening in their own society and country, yet they chose to associate with a movement that is happening thousands of miles away from where they currently reside. We do not know what factors may have influenced the kind of individual choices they made by picking an issue to talk about that is happening far away from them. Don’t you think this deserves some deep thinking before we start judging them from the get-go?

Since we are in this in this faulty argument game now, let me then throw in one of my own fallacious theories out there. Oops… I started with the Appeal to Hypocrisy, didn’t I? Anyway, here’s my theory:

I think this whole thing is a conspiracy by the people who are in power. When they saw how the people united against power and started to bring revolutionary changes that weren’t possible before due to bureaucracy and dirty politics, they started shaming people to break that unity. The colonial “divide and conquer” is at play again. They are dividing a global unity and guilt-tripping people into silence. They are turning one oppressed against another so that they cannot join to fight the one common enemy called, the power.

Slippery slope you’d say? I agree! Nonetheless, it makes more sense than the guilt-tripping arguments made by the manipulators popping up around us like toadstools.

Note: This article was later published in Dhaka Tribune on June 22, 2020.

 

 

আব্বা

আব্বা

হাতে এতগুলো কাজ, কিন্তু কিছুতেই মন বসছে না। সবকিছু ছেড়ে দিয়ে দূরে কোথাও চলে যাওয়ার যে ইচ্ছাটি আমার মাঝে মাঝে করে, সেটি আজকে একটু প্রবল। ব্যস্ততার কারনে, নতুন ভাড়া বাসায় এক বছর পার হয়ে যাওয়ার পরেও, বাসার সবকিছু গুছিয়ে উঠতে পারি নি এখনো। এই শীতের ছুটিতে, অনেকটুকু কাজ এগিয়ে নিয়েছি যদিও। সৌভাগ্যক্রমে আম্মা ছিল সাথে, তাই সেও তার মত কিছু গোছগাছ করল। গোছানোর এক পর্যায়ে আম্মা দৌড়ে আমার কাছে এল, “মুনীফ, দেখ কি পাইসি!” আমি পুরনো বইয়ের স্তুপ থেকে মাথা তুলতেই দেখলাম আম্মা হাতে ছোট একটা কালো পাউচ নিয়ে হাসিমুখে দাঁড়িয়ে আছে। আমি মুহূর্তেই চিনতে পারলাম -আব্বার রক্তে চিনির পরিমাণ মাপার যন্ত্র।
বিভিন্ন সময়ে আমার দুই চাচা ও তাদের পরিবার এর পক্ষ থেকে প্রায়ই যন্ত্রগুলো পেতাম। আব্বা খুব আগ্রহ নিয়ে তার রক্ত পরীক্ষা করতো। আর খুব রুটিন করে সুচ দিয়ে ইনসুলিন নিতো নিজের উরুতে। আম্মা অথবা আমি উপস্থিত থাকলে, আব্বা আমাদেরকে দিয়েই কাজগুলো করাতো। যার সুফলে ইনজেকশন পুশ করার অনেক বছরের অভিজ্ঞতা হয়েছে আমার। আম্মার হাসপাতালের চাকরীর সুবাদে ছোটবেলা থেকেই হাসপাতালে ছিল অবারিত যাওয়া-আসা। তারপরেও কেন জানি, যখনি হাসপাতালে যাই, অথবা কোন পরীক্ষার জন্যে রক্ত দিতে হয়, একটা চাপা অস্বস্তি ও অজানা ভীতি কাজ করে।
আব্বা সবকিছুই আনন্দের সাথে করতো -প্রতি বেলা অজস্র ঔষধ খাওয়া, তিন বেলা ইনসুলিন নেওয়া, রক্ত পরীক্ষা করা, এবং সর্বপরি একজন ডায়েবেটিক রোগীর জন্যে যে সকল খাবার ও তার পরিমাণ সম্পর্কিত নিয়ম নির্ধারণ করা আছে, তা সম্পূর্ণ আত্মবিশ্বাসের সাথে অগ্রাহ্য করা। এই ব্যপারে কোন সতর্কীকরণ করা হলে সে তার চিরাচরিত রসিকতার সুরে বলত, “খাইলেও মরমু, না খাইলেও মরমু। তাইলে খাইয়াই মরি।” এর পরে কেউ আর আব্বার সাথে তর্কে যেত না।
কষ্ট লাগে এই ভেবে যে শেষের কয়েক বছর, সেই ভোজনপ্রিয় মানুষটি কোন কিছু আনন্দ নিয়ে খেতে পারত না। একটু খেলেই বমি হতো। যখনি ইউনিভার্সিটি ছুটি হতো আর আমি ময়মনসিংহ যেতাম, এই দৃশ্য দেখতে হতো। সহ্য করতে পারতাম না। আবার আব্বার সামনে ভেঙ্গেও পরতাম না। মনের অজান্তেই ময়মনসিংহ যাওয়া কমিয়ে দিয়েছিলাম। ঈদের ছুটি নিতাম না। ওভারটাইম করতাম। এখন বুঝি, আমি খুবই দুর্বল চিত্তের একজন মানুষ।
আব্বার চলে যাওয়ার খবরটা যখন আমি আম্মার কাছ থেকে ফোনে পেলাম, আমি ভাষা হারিয়ে ফেলেছিলাম। অনেক ফোন আসছিল। কোনো ফোন ধরতে ইচ্ছা করছিল না। ভেতরটা ফাঁকা লাগছিল। আর অনেক রাগ হচ্ছিল আব্বার উপর। অনেকগুলো জানা ও অজানা অনুভূতির সে এক কিম্ভূতকিমাকার সংমিশ্রণ! অনেকক্ষণ আমি এয়ারপোর্টের রাস্তায় বসে ছিলাম।
নিথর একটা দেহ, যেখানে আমার আব্বার কোন অস্তিত্ব আর নেই, যার কাছে কোন প্রশ্নের আর উত্তর পাওয়া যাবে না, যে কিনা আর কখনোও রসিকতার ছলে উদ্ভট সব যুক্তিবিহীন যুক্তি দেবে না, সেই সুপরিচিত কিন্তু নির্বাক দেহের সাথে আমি কিভাবে নতুন করে পরিচিত হব, বুঝে উঠতে পারছিলাম না।
কিংকর্তব্যবিমূঢ়তার ক্ষণগুলো কাটিয়ে, শেষে সাহস জোগার করলাম। রওনা হলাম। যাত্রার লম্বা সময়টিতে, তার স্মৃতিগুলোয় চোখ বুলিয়ে গেলাম কয়েকবার। যখন উঠানে আব্বার লাশ দেখলাম, একটুও কাঁদলাম না। কোনো প্রশ্নও করলাম না। করলাম না কোন কিছু শোনার আশা। শুধু কপালে একটা চুমু দিয়ে বললাম “আই এম সরি। ফরগিভ মি। আই লাভ ইউ।” হয়ত ছোটবেলা সেও ঠিক একই ভাবে আমার কপালে চুমু দিয়ে তার ভালবাসার কথাটি আমাকে জানিয়েছে। আমরা কেউই কখনোও একে অপরের প্রতি ভালবাসা এভাবে প্রকাশ্যে প্রকাশ করি নি। সবই করেছি আড়ালে।
আজ থেকে ঠিক চার বছর আগে, এই দিনে, আমি আমার আব্বাকে চির বিদায় দেই। আজকের সেই একই দিনে, আমার ভালবাসার সেই মানুষটির জন্মদাত্রী মা, আমার দাদু, হাসপাতালের আই সি ইউ তে কষ্ট ভোগ করছেন। কিভাবে আরও একবার এই নির্মম বাস্তবতার সম্মুখীন হব? কিভাবে আমার চূর্ণ হৃদয়ের টুকরোগুলিকে কুঁড়িয়ে, একসাথে জুড়ব? চিন্তা করেই চোখে হঠাৎ পানি চলে আসলো, বুক ভিজলো, আর দীর্ঘশ্বাসের সাথে কন্ঠনালী থেকে শুধু একটা শব্দই বের হয়ে আসল, “আহ!”
(এই পোস্টটি লিখার তিন ঘন্টা পরে আমার দাদু না ফেরার দেশে চলে যান। উনার বিদেহী আত্মার উপরে শান্তি বর্ষিত হোক।)

বিয়ে

বিয়ে

চারপাশে অনেক সমস্যা। থাকি ঢাকায় -সমস্যার শহর। অবাসযোগ্য শহর হিসেবে আমরা এই মুহূর্তে বিশ্বের তৃতীয় (Global Liveability Index 2019)। এইটাও সমস্যা। গত বছর আমরা দ্বিতীয় ছিলাম। এইবার এক ধাপ পিছিয়ে গেলাম। আমাদের অবস্থা এখন ছাগলের তিন নাম্বার বাচ্চার মত -অপুষ্ট ও অবহেলিত। স্পটলাইট থেকে দূরে সরে যাচ্ছি প্রতিনিয়ত। তবে কবি কিন্তু কথা সত্যি বলেছেন, “সব সমস্যারই সমাধান আছে, যদিও বা সমাধানটি অনাকাঙ্ক্ষিত হয়” (Alice Hoffman)।
যেমন ধরা যাক আমার সমস্যা সমষ্টি (মানসিক ও শারীরিক), যা কিনা আমার পারিপার্শ্বিক সমস্যাসমূহের প্রভাবে কোন না কোন ভাবে প্রভাবিত। এই সমস্ত সমস্যাগুলো বিভিন্ন অবতারে আবির্ভূত হয়। কখনোও মনুষ্য রূপে। কখনও কর্ম হয়ে। কখনও বা লুকিয়ে থাকে দৃষ্টির অগোচরে, আড়াল থেকে শুধু প্রভাব বিস্তার করে যায়। আমার মানসিক র্যাডার সেটা সনাক্ত করতে ভুলে না কখনোও।
কবি নাকি আরও বলেছেন, “দেহ আমাদের মনের দাসমাত্র” (James Allen)। তাই সেই মনের প্রভাব গিয়ে পরে দেহে। অবাসযোগ্য প্রকৃতিতে বসবাসের ফলশ্রুতিতে, গড় আয়ুতেও মোটামোটি ভালই ছাড় পেয়েছি। বলতে গেলে, মধ্যবয়সে এই পা ফেললাম বলে। নাকি আরও তিন-চার বছর আগেই পা দিয়ে ফেলেছি? আমাদের দেশের আবহাওয়া দপ্তরের মত সেটা সঠিকভাবে পূর্বাভাস কেন? আভাস চলাকালীন সময়েও বলা সম্ভবপর নয়। কিন্তু ডাক্তার কড়া গলায় বলে দিলেন, আমার হৃদয় নাকি অনেক ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় অবস্থান করছে। ঝুঁকির দেশে থাকি, তাই অবাক হলাম না। সমস্যার সমাধান চাইলাম। প্রেসক্রিপশনে উনি অবোধ্য অক্ষর সমষ্টি দিয়ে অর্ধ বাক্য গঠন করে লিখেও দিলেন হৃদরোগ প্রতিরোধক কিছু ঔষধসমূহ।
ঔষধ সম্বন্ধে সুশিক্ষা পাওয়ার পর থেকে আমি প্রচন্ড মাথা ব্যাথার জন্যেও ঔষধ খেতে গেলে দ্বিতীয় বারের পরে তৃতীয়বার ভাবি। আর এখন? আমার একটা ঔষধ সংরক্ষন করার বাক্স আছে। সেখানে হরেক রং ও ঢং -এর ঔষধ থাকে। তবে সেটা সমস্যা না।
সমস্যা হচ্ছে, এই প্রত্যেকটি ঔষধের আছে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া। নিউটনের তৃতীয় সূত্র খানিকটা মেনে ঔষধগুলো তাদের ক্রিয়া সম্পন্ন করে। তারই জের ধরে, একদিন ঘুম থেকে উঠে দেখি, ঠোঁট ফেটে রক্ত বের হচ্ছে। মহা বিপদ। এইবার গেলাম ত্বকের ডাক্তারের কাছে। উনিও আগের জনের মত রক্তের কিছু পরীক্ষা দিলেন। আমি এমনিতেই শান্তি প্রিয় মানুষ, রক্তারক্তি ভাল লাগে না বলে কোরবানি পর্যন্ত দেই না। পরীক্ষাগারের কর্মী যখন আমার বাম হাতের দিকে হাত বাড়াচ্ছেন, আমি করুণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললাম, “গতকাল এই হাতে ফুটা করেছেন, এইটাকে আজকের মত রেহাই দেয়া যায় কি?” উত্তরে উনি হাসলেন। তারপরে লম্বা ও মোটা একটা সুচ ঢুকিয়ে দিলেন ডান হাতে। আমি নিজেকে এই পাশবিক দৃশ্য দেখা থেকে বিরত রাখতে, মননিবেশ করলাম দূরে টাঙ্গিয়ে রাখা পাতলা পর্দার একটি দূরদর্শনে। সেখানে “ব্রেকিং নিউজ” সম্বলিত দেশের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে অনেক তথ্য কনিকা পর্দার ডান পাশ থেকে বাম পাশে যেতে যেতে দ্রুত মিলিয়ে যাচ্ছিল। পড়তে বেশ সমস্যাই বোধ করছিলাম। কিন্তু এই ফাঁকে রক্ত নেওয়া শেষ। যাক, একটা সমস্যার ঘোর কাটল।
রাতে রিপোর্ট নিয়ে ডাক্তারের কক্ষে হাজির হলাম। উনি আমার রিপোর্ট দেখলেন। আগের চিকিৎসা-ইতিহাস জানলেন। উনিও কিছু ঔষধ দিলেন। এর মধ্যে আছে একটা ঠোঁটে লাগানোর ক্রিম আর একটা গায়ে মাখার লোশন। যেহেতু কবি আরও বলেছেন, “ওস্তাদের মাইর শেষ রাইতে” (এই কবির নাম জানি না), উনি উনার প্রেসক্রিপশনের শেষ ঔষধের নাম লিখতে লিখতে বললেন, “এইটা করতে পারলে আপনার সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। আর কোন ঔষধ খাওয়া লাগবে না। কিন্তু যতদিন না এই ঔষধ পাচ্ছেন, ততদিন সব ঔষধ চালিয়ে যান।“
সমস্যার সমাধান পেলাম ঠিক! তবে সেখানেই যে আরেকটি বৃহদাকার সমস্যার সূচনা! দিল্লির সেই প্রখ্যাত বা কুখ্যাত মিষ্টান্নের নিকটবর্তী যেই স্বাদ আমি এই এক জীবনে পেয়েছি, এর পরে আমি এই ডাক্তার মশাইকে কি করে বোঝাই যে, উনার দেওয়া সমাধানই হচ্ছে আমার জীবনের সবচেয়ে বড় সমস্যা (যেটা কিনা আমি সারা জীবন এড়িয়ে যাওয়ার এক মহা সংকল্পে নিজেকে আবদ্ধ করেছি)!

দাদু

দাদু

নান্দাইল আমার নানীর বাড়ি আর মুক্তাগাছা আমার দাদীর বাড়ি। নানীর বাড়িতে আমার জন্যে ছিল অবারিত স্বাধীনতা আর দাদীর বাড়িতে ছিল অফুরন্ত ভালবাসা। আমার দাদা ও দাদী দুইজনই খুশিতে ব্যস্ত হয়ে যেতেন আমাদের পেলে। দাদা আনতেন বাজার করে আর দাদী ব্যস্ত হতেন রান্নায়। আমার দাদীকে আমি “দাদু” বলে ডাকি। ময়মনসিংহে আমার জন্ম এবং বেড়ে ওঠা। দাদা চলে গেছেন অনেক বছর। দাদু আছেন এখনো।
ছোট বেলা আমি আমার দাদুর জন্যে পাগল ছিলাম। সবার বড় নাতি হওয়ায় (ছেলের দিক থেকে) আমার প্রতি দাদুর ছিল অন্যরকম ভালবাসা। আমি প্রতি সপ্তাহেই বায়না ধরতাম দাদুর বাড়ী যাওয়ার। সফলও হতাম আব্বাকে রাজি করাতে। আম্মার কটাক্ষ উপেক্ষা করে চলে যেতাম দাদুর সাথে দেখা করতে।
নানা ব্যস্ততা ও ঢাকায় থাকার কারনে এখন আর যাওয়া হয় না ময়মনসিংহে। যাওয়া হয় না নানুর বাড়ী-দাদুর বাড়ী। বার্ধক্যের কারনে দাদুর স্মৃতিও আসা-যাওয়ার মধ্যে থাকে। তবে তা সবই শোনা কথা। প্রথমবার সেটা অনুভূত হয় ঈদের দিন, অনেকদিন পরে সেদিন মোবাইল ফোনে দাদুকে পেলাম।
দাদু? আসসালামুয়ালাইকুম।
ওয়ালাইকুম আসসালাম। কে?
দাদু আমি মুনীফ।
ও মুনীফ! কেমন আছ দাদু?
ভাল আছি দাদু। তোমার শরীর ভাল?
আমিও ভাল আছি। তোমার বাবা কেমন আছে?
এই পর্যায়ে আমি একটু ধাক্কা খেলাম। আমার আব্বা (যে কিনা আমার দাদুর জ্যেষ্ঠ সন্তান) ২০১৬ সালের জানুয়ারীতে আমাদের সবাইকে ছেড়ে চির বিদায় নিয়েছেন। আব্বা মারা যাওয়ার সময়, দাদু ছিলেন ইউএস -এ। বড় ছেলের নিথর দেহ তার দেখতে হয়নি। হয়ত সে জন্যেই আব্বার চলে যাওয়ার স্মৃতিটা তার জন্যে দুর্বল। আমি সামলে উঠে আবার জিজ্ঞেস করলাম।
দাদু তুমি ঠিক আছ?
হ্যাঁ। তোমার বাবা কেমন আছে?
আমাকে চিনতে পারছো?
হ্যাঁ। চিনব না কেন?
বল তো আমি কে?
মুনীফ।
তোমার বড় ছেলের নাম কি?
হেলাল।
আমি তোমার বড় ছেলের বড় ছেলে।
হ্যাঁ। হেলাল কেমন আছে?
আমি দীর্ঘশ্বাস আড়াল করে বললাম, “ভাল”।
আজ ঘটনাক্রমে একটা কনসালটেন্সির কাজে আমার যেতে হয় নান্দাইল এর ওয়ার্ল্ড ভিশন এরিয়া অফিসে। কাজ শেষে সিদ্ধান্ত নেই, অফিসের গাড়ি যেহেতু আছে, ঢাকা ফেরত আসার আগে মুক্তাগাছা যাব। দাদুকে দেখতে। রাস্তায় তুলে নিলাম আম্মাকে। কিছুক্ষণ আগে অফিস থেকে ফিরে আমার বার্ধক্য পথযাত্রী আম্মাও ক্লান্ত। কিন্তু এতদিন পরে দাদুকে দেখতে যাচ্ছি, তাও অল্প সময়ের জন্যে, আমি ভাবলাম, দাদু হয়ত আমাকে ঢাকা আসতে দিবে না, তখন বলব, “আম্মাকে রেখে যাচ্ছি তোমার কাছে”।
গাড়ী যখন আমার দাদুর “সখের কুটির” এর সামনে এসে থামল, আমি আমার হৃদস্পন্দন শুনতে পাচ্ছিলাম। ড্রাইভার ভাই, দরজা খুলে দিয়ে বলল, “স্যার, নামবেন না?” আমি বাস্তবে ফেরত আসলাম। ইতস্তত করে বললাম, “হ্যাঁ। নামছি। আপনি সামনে থেকে গাড়ী ঘুরিয়ে আনেন। আমি পনের মিনিটের মধ্যে আসছি।”
অনেক সংকোচ নিয়ে লোহার ছোট দরজা গলে ভিতরে ঢুকতেই চির পরিচিত উঠান ও ইংরেজি “এল” আকৃতির বাড়িটি গোচর হল। দরজা খুলে ভিতরে ঢুকলাম। দাদুর ঘরে ঢুকতে ঢুকতে ডাকতে লাগলাম, “দাদু… দাদু…”
কে এসছে?
“দাদু, আমি মুনীফ।” দাদুর পাশে গিয়ে বসলাম। দাদুও উঠে বসলেন। আম্মা পিছনে ছিল। দাদু আম্মার দিকে তাকিয়ে হাসতে লাগলেন। আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, “ও কে?” আমি বললাম, “ও হচ্ছে তোমার ছেলে হেলাল এর বউ, আমা্র আম্মা, জ্যোৎস্না।”
কি বলে? নাহ!
এইবার আম্মার অবাক হবার পালা। আম্মা বলল, “আমি আপনার বউমা। আপনার জন্যে না সেইদিন কবিতা লিখলাম, ‘বকুল রাণীর রাজপ্রাসাদ…?'” দাদু শিশুর মত ফিক করে হেসে দিলেন, “না তুমি জ্যোৎস্না না। কিন্তু তোমার চেহারা অনেক চেনা চেনা লাগছে।” এই পর্যায়ে, আমি পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণ নিলাম। “দাদু, জ্যোৎস্না দেখতে কেমন? অল্প বয়স?” দাদু মাথা নেড়ে আমার সাথে সহমত পোষণ করলেন। আমি বললাম, “তুমি যেরকম বৃদ্ধ হচ্ছ, জ্যোৎস্নাও বৃদ্ধ হচ্ছে। তার চেহারায়ও পরিবর্তন আসছে। এইজন্যে চিনতে পারছ না।”
পনেরো মিনিটের পুরোটাই চলে গেল পরিচয় পর্ব সারতে। আম্মা আমাকে বলছিলেন যে দাদু নাকি ইদানিং কমলা খুব খেতে পছন্দ করে। আমি সেই জন্যে যাওয়ার আগে, কমলা, মাল্টা, আপেল ও এক বাক্স বিস্কুট কিনে নিয়ে যাই। কাগজে মোড়ানো প্রতিটি ঠোঙা রাখি তার সামনে। “দেখ তোমার জন্যে কি নিয়ে এসেছি।”
“কি এটাতে?” বলে খুশিতে একটার পর একটা ঠোঙা ছিঁড়তে লাগলেন দাদু। কমলা দেখে আরও খুশি হয়ে গেলেন। আম্মাকে বললাম কমলার খোসা ছাড়িয়ে দিতে। আম্মা খোসা ছাড়িয়ে দাদুর হাতে তুলে দিলেন কমলা। দাদু খুশি মনে কমলার কোয়া মুখে পুরতে লাগলেন, আর আমার দৃষ্টি ঝাপসা হতে শুরু করল।
রীতি অনুযায়ী দাদু আমাকে আপ্যায়ন করা নিয়ে ব্যস্ত হতে চাইলেন। দাদুর স্মৃতি লোপের সুযোগ নিয়ে বললাম, “আমরা সবাই খেয়েছি দাদু।” সেটা শুনে দাদু শান্ত হলেন। দাদু আমার হাত শক্ত করে ধরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করলেন। আমি দাদুকে ধরে দাঁড়াতে সাহায্য করলাম। আমার সাথে দাদু বারান্দার সোফায় এসে বসলেন। আমি দাদুর মাথায় হাত বুলিয়ে দিলাম অনেকক্ষণ। দাদু কান্না কান্না সুরে বললেন, “এত আদর দিও না, ফুরিয়ে যাবে।” চোখের পানি চেপে বললাম, “ফুরাবে না দাদু।”
“কেমন করে যেন অনেক একা হয়ে গেলাম।” হতাশার সুরে বললেন দাদু।
আম্মা পিছন থেকে বললেন, “আমরা সবাই একা, এসেছি একা, যাবও একা।”
আমি দাদুকে বললাম, “চল দাদু, তোমাকে আমার সাথে নিয়ে যাব। ঢাকায়।”
কখন?
এখন। তুমি আমার সাথে, স্নেহ আপুর সাথে থাকবে। স্নেহ আপু সবসময় তোমার কথা বলে।
নিজের বাড়ী ছেড়ে কোথাও যাব না।
“কি আছে এখানে?”, রেগে গিয়ে বললাম।
বারান্দার ওপারে রঙ্গন ফুলের গাছের দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে বললেন, “ফুল”।
আমি আর সহ্য করতে পারলাম না। দাদুকে জড়িয়ে ধরে বললাম, “দাদু, আমার যেতে হবে।” দাদু, আমাকে থামাতে কিছু বলতে যাচ্ছিলেন, সাথে সাথে আমি বললাম, “আম্মাকে রেখে যাচ্ছি তোমার কাছে। আজকে রাতে তোমার সাথে থাকবে। আমার দুইটা মিটিং আছে ঢাকায়।”
দাদু আবার আমাকে ধরে উঠে দাঁড়ালেন। আমার বারণ অগ্রাহ্য করে হেঁটে হেঁটে আমার সাথে দরজা পর্যন্ত আসতে লাগলেন। “দাদু, তোমার এগিয়ে দিতে হবে না।”
“দরজা পর্যন্তই তো যাব।” হাসলেন দাদু।
আমি উঠান পেরিয়ে সেই লোহার ছোট দরজা গলে বাইরে বের হওয়ার সময় চিন্তা করলাম যে আর পেছন ফিরে তাকাবো না। কিন্তু মন কে আর ফেরাতে পারলাম না। শেষবারের মত পেছনে তাকালাম। দাদুর হাসিমুখ তাকিয়ে আছে আমার দিকে। অনেক কষ্টে হাত তুলে নারলাম বিদায়ী ভঙ্গিতে। দাদুও হাত তুলে বিদায় জানালেন।
গাড়ীতে উঠে, ড্রাইভার ভাইকে কান্নাজরিত কন্ঠে বললাম, “সরি ভাই, একটু দেরী হয়ে গেল। চলেন।”
উনি কিছুক্ষণ আমার চোখের দিকে তাকিয়ে থেকে গাড়ির ইঞ্জিন চালু করলেন,  “কি যে বলেন স্যার।”
আমি আমার ল্যাপটপ খুলে লিখতে বসলাম। চোখে ভাসছিল দাদুর হাসি। কানে বাজছিল ক্রমান্বয়ে মৃদু হতে থাকা দাদুর কণ্ঠস্বর। কিবোর্ড এ পরছিল নোনা জল।

Realizations of 2018

In retrospect, it seems like 2018 has been the dreamiest year; it felt like going down the rabbit hole and back. My mind is still in its opaque state for me to figure out, what I should be feeling about the trip. Quite “trippy” indeed.

The events that took place and the people who came in and went out of my life in this year, should define how my 2018 was, but when I think about it, it’s all about the feelings I have experienced. Those feelings were almost always followed by a decision, which in every case then was the causation of a new feeling. It was all like a domino effect, a chain reaction in progress.

What I realized is that this phenomenon called “life” cannot be ceased until I am deceased; intervening in that natural process without a divine support can in fact, affect virtually everything around me -especially, the people I care for and love the most. How pathetically inter-dependent we are! Maybe, this is why the two most sought things by human beings are non-existent in essence and effect – “independence” is a unicorn and “truth,” a fire-breathing dragon.

There are no cheat-codes or shortcuts. There are only challenges ahead and ladders to the next level. Still, I want to play this game out with the one life I got, to see the end credits. What can be more “liberating” than genuinely unveiling the “ultimate fact”?

Identity Crisis

Human life is like a quest. At birth, humans have only one identity—human! In the process of growing up, we adopt different traits from our environment. Our conscience unconsciously decides which identity we should mold ourselves into. We cherry-pick from our culture, family, and language to shape who we are. However, when we suddenly move away from our familiar world, or when the world around us experiences rapid change, we may become confused about our identity. We start to investigate the issue and try to reach an equilibrium. Those of us who can identify the issue and strive to fit in with the environment undergo tremendous psychological phenomena because our identity is crucial to us. Even if we change our behavior, our biological features unyieldingly broadcast an identity that we may no longer feel a part of.

I am a Bangladeshi, and the first time I experienced an identity crisis was when I went to the U.S. in 2011. I was young and naïve but had already built a strong Bangladeshi identity that I was proud of. When I started living with a conservative white family with American traditions and values, I became the perfect example of the dictionary definition of Identity Crisis: “personal psychosocial conflict, especially in adolescence, that involves confusion about one’s social role and often a sense of loss of continuity to one’s personality” (Merriam-Webster’s online dictionary, 2017). I lived in Altoona, Iowa, a predominantly white conservative county. After spending a few months immersed in American culture, I went to the bathroom and asked my reflection in the mirror, “Who am I?” My reflection received a bolt out of the blue, jaw dropped in awe. I was not only talking to myself in English but also thinking in English. That inner self within us, which some call conscience and others call soul, was speaking in English. I forced it to speak in Bangla. I failed. I panicked. I had never thought that I would be so depressed just because I could not define my identity for one moment in my life. I realized how crucial identity is for human survival but how ignored it is in our conscious life. I was uprooted from Bangladesh, and in the U.S. I was like an uprooted plant. “To be rooted is perhaps the most important and least recognized need of the human soul” (Ferguson, 1990). We all want to be rooted wherever we are because only then can we identify ourselves in the crowd. Identity is what matters to us the most as human beings.

Finally, I did insert my roots into American soil. I transformed my identity to a new level. The new identity gave me confidence, and I was reassured by certain students in my school, who, upon first meeting me, could not tell that English was my second language. They thought I was an Indian American. I had to reiterate the fact that “I am a Bangladeshi” numerous times throughout my one academic year in the U.S., and still people would call me an Indian. My dark “Bollywood” hairstyle and brown skin proclaimed to the world, “I am an Indian.” Even when I clarified that I am Bangladeshi and that we are a totally different country with a different culture and religion, people would eye my hair and skin color again and say, “…but…but you look like an Indian! Like Raj from ‘The Big Bang Theory’.” This experience resembles that of an Indian couple in one of Lahiri’s stories from Interpreter of Maladies, who, after buying a new house with a Jesus Christ statue in the garden, are asked by a neighbor, “I hope you don’t mind my asking… but I noticed the statue outside, and are you guys Christian? I thought you were Indian” (Lahiri, 2014). From this seemingly universal experience, I lost hope and stopped correcting the Americans. I can change my tongue, I can change my religion, and I can even pretend to believe in American traditions and values, but I absolutely cannot change the color of my skin.

To some, my experience might sound a tad exaggerated. They might say that identity crises do not occur among Bangladeshi people because we live all over the world, contributing to the global labor force. We send back remittances and enrich our country. However, if they are honest, they must agree that these working-class immigrants are deprived of a life outside their work. They lead a machine’s life to feed their loved ones back home. They are already facing an identity crisis, asking themselves whether they are humans or machines. They had to let go of their Bangladeshi culture and language; they too either went or are going through a Bangladeshi identity crisis in a foreign land.

Meanwhile, my identity crisis did not end when I returned to Bangladesh. It restarted. I was criticized by my family for not being able to speak Bangla without English contamination. Strangers—men and women—on the street looked at me like I was some kind of lunatic when I said “hi” to them while passing by. I had to re-engineer my identity back to Bangladeshi mode. Who knows? Maybe someday, I will have to re-engineer myself to some other foreign identity.